ঢাকা: শিক্ষকদের পেনশন দিতে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোতে (ব্যানবেইস)
অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিম।
দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান, দুদকের অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগ আসে, ব্যানবেইসে শিক্ষকদের
অবসরোত্তর বিল পাস করানোর জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক
জেসমিন আক্তারের নেতৃত্বে একটি টিম রোববার (০৭ এপ্রিল) অভিযান চালায়।
সরেজমিন অভিযানে টিম জানতে পারে, ৩০ জুন ২০১৭ তারিখের পর দাখিলকৃত কোনো বিল পাস করা হয়নি। এ বিষয়ে টিম
অবসর সুবিধা বোর্ডের পরিচালক মো. খসরুল আলম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, পেনশন বিল অনুমোদন কমিটির
সাবেক সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী গত ১২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে অবসরে গেলেও আজ পর্যন্ত কোনো সদস্য
সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এ কারণে কোনো বিলেরই প্রক্রিয়াকরণ হচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে কারও নিয়োগ না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন।
দুদক টিম উপস্থিত শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের অভিযোগগুলো লিপিবদ্ধ করে। টিম অভিযোগ পায়, সাবেক সদস্য
সচিবের ব্যক্তিগত সহকারী মারুফ অবসর ভাতা ভোগীদের কাছ থেকে দ্রুত বিল পাস করিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে বিভিন্ন অনৈতিক আর্থিক সুবিধা ভোগ করছেন। দুদক টিমের পর্যবেক্ষণকে আমলে নিয়ে উল্লিখিত অফিস সহকারীকে লিখিতভাবে সতর্ক করা
হয়।
এদিকে দেশব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলিতে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে তিন জেলায় একযোগে অভিযান চালিয়েছে দুদক
এনফোর্সমেন্ট টিম।
দুর্নীতি দমন কমিশনের রাজশাহী, পাবনা ও সিলেট কার্যালয় থেকে যথাক্রমে নওগাঁ, পাবনা ও সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা
অফিসে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
দুদক টিম শিক্ষক বদলির ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পায় এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জব্দ করে। সব
কাগজপত্র যাচাইপূর্বক টিম কমিশনে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন পেশ করবে।
অপরদিকে বরগুনার তালতলী উপজেলায় শ্রেণীকক্ষের ছাদের গ্রেড বিম ভেঙে ছাত্রী মৃত্যুর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদকের
একটি বিশেষ টিম ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে।
গত শনিবার (০৬ এপ্রিল) তালতলীর ৫ নং ছোটবগী পি কে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় ক্লাস চলাকালে তৃতীয়
শ্রেণিকক্ষের গ্রেড বিম ভেঙে পড়ে কয়েক জন শিক্ষার্থী আহত হয় ও একজন নিহত হয়।
এ বিষয়ে অনিয়ম খতিয়ে দেখতে দুদক, পটুয়াখালী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মুজ্জাম্মিল হোসেনের নেতৃত্বে
একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
টিম বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির প্রধান ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এবং বিদ্যালয় নির্মাণ ও মেরামত সংক্রান্ত
নথি সংগ্রহ করে। এ বিষয়ে কমিশনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে।