সর্বশেষ:
Home / জাতীয় / জেনে নিন মা দিবসের ইতিহাস

জেনে নিন মা দিবসের ইতিহাস

 

বিশ্ব মা দিবস: মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও ত্যাগের অমর স্মরণে

 

 

পৃথিবীর সবচেয়ে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার প্রতীক হলেন ‘মা’। একজন মা তাঁর সন্তানের জন্য যে ভালোবাসা ও ত্যাগ স্বীকার করেন, তা তুলনাহীন। শিশুর মুখে প্রথম উচ্চারিত শব্দটিই হয় “মা”। সন্তানের কাছে মা মানেই সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল।

 

এই ভালোবাসা ও ত্যাগকে সম্মান জানাতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয় ‘বিশ্ব মা দিবস’। প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার এই দিনটি পালন করা হয়। সেই হিসেবে আজকের দিনটি মা দিবস হিসেবে পরিচিত।

 

মা দিবসের ইতিহাস

 

মা দিবসের উৎপত্তির পেছনে রয়েছে প্রাচীন ঐতিহ্য। প্রাচীন গ্রিক ও রোমানরা মা দেবী রিয়া ও সাইবেলির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উৎসব করতেন। পরে ষোড়শ শতকে ইংল্যান্ডে ‘মাদারিং সানডে’ নামে একটি দিবস চালু হয়, যা খ্রিস্টানদের ‘লেন্ট’ পর্বের চতুর্থ রবিবার পালিত হতো।

 

এই দিনটিতে ছেলে-মেয়েরা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পেত। এমনকি গৃহকর্মে নিয়োজিতদেরও ছুটি দেওয়া হতো যেন তারা তাদের মায়ের সঙ্গে দেখা করতে পারে। এই প্রথা থেকে ধীরে ধীরে দিবসটি “মাদারিং সানডে” নামে পরিচিতি পায়, বিশেষ করে ব্রিটেনে।

 

আধুনিক মা দিবসের সূচনা

 

বর্তমান সময়ের মা দিবসের সূচনা হয় যুক্তরাষ্ট্রে, আর এর পেছনে ছিলেন আনা মারিয়া জার্ভিস নামের এক নারী, যিনি নিজে কখনো মা হতে পারেননি। ১৯০৭ সালে একটি বক্তৃতায় তিনি মায়ের জন্য বিশেষ একটি দিনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। ১৯০৮ সালে তার প্রয়াত মা আনা রিভিস জার্ভিসের স্মরণে তিনি প্রথমবারের মতো মা দিবস পালন করেন।

 

১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রবিবারকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা দেন, মা দিবস হিসেবে। এরপর থেকেই এটি সারাবিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

 

বাণিজ্যিকীকরণ ও আনার বিরক্তি

 

তবে সময়ের সাথে সাথে মা দিবস হয়ে ওঠে একটি বাণিজ্যিক উৎসব—কার্ড, ফুল ও উপহারের মাধ্যমে উদযাপন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। এই বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে আনা জার্ভিস প্রবলভাবে প্রতিবাদ করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, মা দিবস হওয়া উচিত আত্মিক শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশের দিন, কেবল পণ্যের কেনাবেচা নয়।

 

তিনি এ বিষয়ে ৩৩টি মামলায় জড়ান এবং জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত এই বিরোধিতায় লড়াই করে যান। অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে তিনি শেষ জীবন কাটান এক স্বাস্থ্যনিবাসে এবং ১৯৪৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার শেষ ইচ্ছানুযায়ী তাকে তার মায়ের পাশেই সমাহিত করা হয়।

 

মায়ের প্রতি সম্মানই মা দিবসের মূল বার্তা

 

একজন মা সারাজীবন নিঃস্বার্থভাবে সন্তানকে আগলে রাখেন। তাই এই দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের জীবনে মা কতটা অমূল্য।

Check Also

৩৬ বছর পর প্রেসক্লাব ভবন, বাঞ্ছারামপুরের সাংবাদিকতায় অনন্য মাত্রা

ডেক্স রিপোর্ট    অবশেষে পূরণ হলো বাঞ্ছারামপুরের সাংবাদিকদের দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন। দীর্ঘ ৩৭ বছরের …